আমাদের যে কোন পণ্য অর্ডার করতে WhatsApp: +8801321208940, হট লাইন: +8809639426742 কল করুন

আইবিএস (IBS) সমস্যা থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে মুক্তির উপায়

ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS) একটি ক্রনিক হজমজনিত সমস্যা যার কারণে পেটের ব্যথা, গ্যাস, ফুলে যাওয়া, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতি রোগের প্রাদুর্ভাব পরিলক্ষিত হয়। আইবিএস-এর নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই, তবে বিভিন্ন খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা পরিবর্তন করে এই সমস্যার তীব্রতা কমানো যেতে পারে।

 

আইবিএস আক্রান্তের লক্ষণ

পেটের পীড়ায় অনেকেই ভুগে থাকেন। লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনসহ নানা কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। এছাড়া কায়িক শ্রমের অভাবের কারণেও অনেক হজম প্রক্রিয়া ঠিকমতো হয় না।

জীবনযাপন প্রণালিতে কিছুটা পরিবর্তন আনলেই আইবিএস থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। সাধারণত আইবিএস এর কারণে পেটের নিচের দিকে মাঝে মাঝে ব্যথা হয়। মলত্যাগের অভ্যাস ও ধরন পরিবর্তিত হয়ে যায়। কখনো ডায়রিয়া, কখনো কোষ্ঠকাঠিন্য। কখনো আমাশয় দেখা যায়। এছাড়া উদ্বায়ু, পেট ফাঁপা, পেট ভারবোধ হওয়া ইত্যাদি সমস্যা লেগেই থাকে। এ রোগের জন্য মানসিক চাপকে অনেক সময় দায়ী করা হয়।

 

আইবিএস রোগীর খাদ্যাভাসে ডাক্তারের পরামর্শ

আইবিএস রোগীরা কী খাবেন সে সম্পর্কে  পুষ্টিবিদ ও  নিউট্রিশন অফিসারেরা মনে করেন,

আইবিএস রোগীদের নির্দিষ্ট কোনো খাদ্য তালিকা নেই। তবে রোগীদের চিহ্নিত করতে হবে কী ধরনের খাবারে তাদের সমস্যা হচ্ছে।

এছাড়া নারিকেল তেল IBS নিরাময়ে ভালো ফল দেয়। নারিকেল তেল দিয়ে রান্না অথবা প্রতিদিন খালি পেটে ২ চা চামচ নারিকেল তেল খেলে ভালো থাকবেন। কারণ এ তেল অন্ত্রের প্রদাহ প্রশমিত করে। আইবিএসের রোগীরা কিছু নিয়ম মেনে চলবেন। যেমন-

  • আঁশবিহীন সবজি ও ফল খেতে হবে।
  • পানির পরিমাণ বাড়াতে হবে।
  • ভাত-চালের রুটি-আলু-নুড্লস খাওয়া যাবে।
  • খেতে হবে মাছ-ডিম-মুগডাল।
  • অতিরিক্ত চর্বি ও মিষ্টি বাদ দিতে হবে।
  • ভালো করে চিবিয়ে খাবার খেতে হবে।
  • প্রতিদিনের খাবারে কাঁচা পেঁপে থাকলে ভালো হয়।
  • কড়া চা-কপি যতটা সম্ভব কম খেতে হবে।
  • বাসি খাবার না খাওয়াই ভালো।
  • রান্নার ধরন হবে ভাঁপানো, সিদ্ধ ও গ্রিল।
  • সালাদ ড্রেসিং, মেয়ানেজ, পনির বাদ দিতে হবে।
  • প্রোবায়টিক হিসাবে দই খেলে ভালো হয়।
  • কাঁচা রসুন, পেঁয়াজ, শসা, মুলা এবং ঝালযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে।
  • নিয়মিত ও প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খেতে হবে।
  • রাত জাগা বন্ধ করতে হবে এবং পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
  • প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবার, তামাক, জর্দা, সিগারেট বাদ দিতে হবে।
  • কোমল পানীয় ও অ্যালকোহল বাদ দিতে হবে।
  • প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এতে হজমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে সমস্যা বাড়িয়ে দেবে।

সঠিক খাদ্যাভ্যাসই আইবিএস-এর উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। খাদ্যাভাস পরিবর্তনের গুরুত্ব এবং কী ধরনের খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করলে আইবিএস থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে তা আলোচনা করা হলো।

 

খাদ্যাভাস পরিবর্তনের গুরুত্ব

আইবিএস নিরাময়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কী খাওয়া হচ্ছে এবং কীভাবে খাওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন খাবার আমাদের হজম প্রক্রিয়ায় ভিন্ন প্রভাব ফেলে। তাই, কিছু খাবার আইবিএস উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়, আবার কিছু খাবার এই উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। নিচে সেসব খাবার এবং খাদ্যাভ্যাসের বিবরণ দেওয়া হলো, যা আইবিএস-এর জন্য উপকারী।

কম ফোডম্যাপ (FODMAP) ডায়েট

ফোডম্যাপ (FODMAP) বলতে বোঝানো হয় কিছু ছোট আকারের শর্করা (কার্বোহাইড্রেট) এবং সুগার অ্যালকোহল যেগুলো হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এই শর্করাগুলো হজম না হয়ে দ্রুত অন্ত্রে পৌঁছে গিয়ে গ্যাস এবং পানি জমিয়ে দেয়, যা আইবিএস উপসর্গকে আরও তীব্র করে তোলে। কম ফোডম্যাপ ডায়েট আইবিএস রোগীদের জন্য অনেক কার্যকর।

কম ফোডম্যাপ খাবার কী কী?

কম ফোডম্যাপ ডায়েটে নিম্নোক্ত খাবারগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়:

  • প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: ডিম, মুরগি, মাছ, এবং টোফু।
  • সবজি: গাজর, শসা, লেটুস, বাঁধাকপি (কম মাত্রায়), এবং টমেটো।
  • ফলমূল: কলা, আঙ্গুর, বেরি জাতীয় ফল, কমলালেবু।
  • শস্যজাত খাবার: ওটস, ব্রাউন রাইস, এবং কোয়ার্ণ।
  • ল্যাকটোজমুক্ত দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার।

 

উচ্চ ফোডম্যাপ খাবার এড়িয়ে চলা

উচ্চ ফোডম্যাপ সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, যেমন:

  • ডেইরি: দুধ, আইসক্রিম, পনির।
  • ফলমূল: আপেল, আঙ্গুর, পীচ।
  • সবজি: ব্রকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, ফুলকপি।
  • শস্যজাত খাবার: গম, রাই, বার্লি।
  • মিষ্টিজাতীয় খাবার: উচ্চ ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ, মধু।

 

ফাইবারের ভূমিকা

ফাইবার আইবিএস রোগীদের জন্য দ্বৈত প্রভাব ফেলতে পারে। সমন্বিতভাবে গ্রহণ করলে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক, তবে অতিরিক্ত ফাইবার গ্রহণ করলে পেটের ফাঁপা ভাব, গ্যাস, এবং ডায়রিয়া বাড়িয়ে দিতে পারে। ফাইবারের দুটি প্রধান প্রকার হলো দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় ফাইবার।

দ্রবণীয় ফাইবার

দ্রবণীয় ফাইবার পানি শোষণ করে জেলি জাতীয় পদার্থে পরিণত হয়, যা অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে না এবং নরম মল তৈরি করতে সাহায্য করে। এই ধরনের ফাইবার আইবিএস রোগীদের জন্য সাধারণত উপকারী।

  • উৎস: ওটমিল, আপেল, গাজর, মটর, এবং আলু।

অদ্রবণীয় ফাইবার

অদ্রবণীয় ফাইবার অন্ত্রের গতি বাড়ায়, যা কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। তবে এটি আইবিএস রোগীদের জন্য সবসময় উপকারী নয়, কারণ এটি গ্যাস এবং ফাঁপা ভাব বাড়াতে পারে।

  • উৎস: বাদাম, সবুজ শাকসবজি, গোটা শস্য।

প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিক

প্রোবায়োটিক হল উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে এবং অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য রক্ষা করে। অনেক রোগী প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে উপসর্গের উন্নতি লক্ষ্য করেন। যেমন:

  • প্রোবায়োটিক উৎস: দই, কেফির, কম্বুচা, মিসো স্যুপ।

প্রিবায়োটিক হলো এমন খাদ্য উপাদান যা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তবে প্রিবায়োটিকের প্রতি আইবিএস রোগীদের সংবেদনশীলতা থাকতে পারে, তাই এটি সঠিক পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। যেমন:

  • প্রিবায়োটিক উৎস: মটরশুঁটি, রসুন, পেঁয়াজ, কলা।

ল্যাকটোজ ও গ্লুটেন মুক্ত খাদ্যাভাস

আইবিএস রোগীদের মধ্যে ল্যাকটোজ (দুধের শর্করা) এবং গ্লুটেনের (গমের প্রোটিন) প্রতি সংবেদনশীলতা দেখা যায়। ল্যাকটোজ হজম না হলে তা অন্ত্রে গ্যাস, পেট ফাঁপা, এবং ডায়রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে ল্যাকটোজ মুক্ত দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করা যেতে পারে।

অনেক আইবিএস রোগী গ্লুটেন এড়িয়ে চললে উপসর্গের উন্নতি লক্ষ্য করেন। গ্লুটেনমুক্ত খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করতে চাইলে গম, রাই, এবং বার্লি পরিহার করতে হবে। এর পরিবর্তে গ্লুটেনমুক্ত শস্য যেমন ব্রাউন রাইস, কুইনোয়া, এবং ভুট্টার উপর নির্ভর করতে হবে।

মসলা ও তেলজাতীয় খাবার পরিহার

আইবিএস রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার এবং উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার সমস্যা তৈরি করতে পারে। মসলা পেটের গ্যাস্ট্রিক এসিডের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়, যা পেটের ব্যথা এবং অস্বস্তি তৈরি করে। মসলা ও তেল জাতীয় খাবার হজম প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়, যা আইবিএস উপসর্গ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই নিচের খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত:

  • মশলাযুক্ত খাবার: মরিচ, আদা, সরিষা।
  • তেলসমৃদ্ধ খাবার: ভাজা খাবার, বেকারি প্রডাক্টস।

 ক্যাফেইন, এলকোহল, ও চিনি এড়িয়ে চলা

ক্যাফেইন অন্ত্রের কার্যকলাপকে উদ্দীপ্ত করে, যা আইবিএস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে কফি এবং শক্তিশালী চা আইবিএস রোগীদের জন্য সমস্যা তৈরি করে। এলকোহলও অন্ত্রের প্রদাহ বাড়ায় এবং হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

চিনি এবং মিষ্টিজাতীয় খাবারও আইবিএস উপসর্গ বাড়াতে পারে। চিনির পরিবর্তে স্টেভিয়া বা অন্যান্য প্রাকৃতিক মিষ্টি ব্যবহার করা যেতে পারে।

খাবারের সময় এবং পরিমাণ

খাবারের সময় ও পরিমাণও আইবিএস উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অতিরিক্ত খাবার খেলে পেটের উপর চাপ পড়ে এবং তা হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই, দিনের মধ্যে ছোট ছোট পরিমাণে খাবার খাওয়া ভালো। পাশাপাশি খাবার খাওয়ার সময়ও গুরুত্বপূর্ণ। বেশি রাত করে খাবার খেলে তা আইবিএস উপসর্গ বাড়িয়ে দিতে পারে।

পর্যাপ্ত পানি পান

পানি হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে এবং অন্ত্রে পানি ধরে রাখে, যা মলের গঠনকে নরম করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করলে আইবিএস রোগীদের কোষ্ঠকাঠিন্য কমানো যেতে পারে। বিশেষ করে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পর পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি।

মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপন

আইবিএস এর উপসর্গ অনেকাংশে মানসিক চাপের সাথে সম্পর্কিত। মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ অন্ত্রের কার্যকলাপে প্রভাব ফেলে, যার ফলে আইবিএস এর উপসর্গ বেড়ে যায়। তাই নিয়মিত ব্যায়াম, মেডিটেশন, এবং যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমিয়ে আইবিএস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

পরিশেষে বলা যায় যে, দুঃখজনক হলেও এটা সত্যি যে এই সমস্যার পুরোপুরি কোনো সমাধান নেই। তবে একে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। রোগীর লক্ষণ অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা দরকার। আমরা উপরের খাদ্যাভাসগুলো পালনের চেস্টা করবো। দুধ, দুগ্ধজাত খাবার, শাক ইত্যাদি যেসব খাবারে সমস্যা বাড়ে, সেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা মেনে চলার অভ্যাস থাকলে রোগী সহজেই বুঝতে পারবেন কবে কোন খাবারে তাঁর সমস্যা হয়েছিল। এ ছাড়া মানসিক চাপ কমাতে হবে। প্রয়োজন হলে উপসর্গ বুঝে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কিছু ওষুধ দিতে পারেন। তবে আইবিএসের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই আপনার নিজের হাতে। স্বাস্থ্যকর ও শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবন যাপন করলে ভালো থাকবেন।

Related Posts

আলু বোখারা, এই ছোট্ট মিষ্টি-টক ফলটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু করে তোলবে। পুষ্টিতে ভরপুর এই ফলটি শুধু একবার খেলে নয়, এটি দিয়ে তৈরি করা যায় অসংখ্য স্বাস্থ্যকর ও মজাদার রেসিপি। চলুন জেনে নিই আলু বোখারার উপকারিতা, খাওয়ার সঠিক নিয়ম এবং এটি দিয়ে কী কী তৈরি করা যায়। আলু বোখারার পুষ্টিগুণ আলু বোখারা আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। এতে রয়েছে: ভিটামিন সি: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। ভিটামিন কে: রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা রোধ করবে। পটাসিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করবে। ফাইবার: হজমশক্তি বাড়াবে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: দেহের কোষগুলোকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করবে এবং বার্ধক্যে প্রতিরোধ করবে। আলু বোখারার উপকারিতা ১. হজম শক্তি বৃদ্ধি করে আলু বোখারা প্রাকৃতিক ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়াবে। ২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ আলু বোখারা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এটি ফ্লু ও সাধারণ সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করবে। ৩. হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা আলু বোখারায় থাকা ভিটামিন কে এবং ক্যালসিয়াম হাড়কে শক্তিশালী করবে। এটি অস্টিওপোরোসিসের প্রতিরোধ করবে। ৪. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখবে পটাসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। ৫. হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখা আলু বোখারা কোলেস্টেরল কমাবে, যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাবে। ৬. ত্বকের যত্নে উপকারী এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াবে এবং বার্ধক্যের লক্ষণ কমাবে। ৭. ওজন নিয়ন্ত্রণ ফাইবারের পরিমাণ বেশি হওয়ায় এটি ক্ষুধা কমাবে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করবে। আলু বোখারা খাওয়ার নিয়ম আলু বোখারা খাওয়ার সঠিক নিয়ম মেনে চললে এর পরিপূর্ণ উপকারিতা উপভোগ করা যাবে। এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো: ১. সকালে খালি পেটে খান এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে ৩-৪টি ভিজিয়ে খেয়ে নিন। এটি হজমশক্তি বাড়াবে এবং শরীর ডিটক্সিফাই করবে। ২. স্ন্যাকস হিসেবে খান দিনের মধ্যে হালকা ক্ষুধা লাগলে শুকনো আলু বোখারা খান। এটি দীর্ঘক্ষণ এনার্জি ধরে রাখবে। ৩. মিষ্টি পানীয় তৈরি করে খান আলু বোখারার শরবত বা স্মুদি বানিয়ে পান করুন এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখবে এবং পুষ্টি জোগাবে। ৪. রান্নায় ব্যবহার করুন পোলাও বা বিরিয়ানিতে আলু বোখারা একটি সুস্বাদু উপাদান হিসেবে ব্যবহার করুন। ৫. খাওয়ার পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ অতিরিক্ত না খেয়ে প্রতিদিন ৫-৬টি আলু বোখারা খাওয়া যথেষ্ট। অতিরিক্ত খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে। আলু বোখারা দিয়ে তৈরি রেসিপি আলু বোখারা শুধু কাঁচা বা শুকনো খাওয়াই নয়, বরং এটি দিয়ে নানা রকম সুস্বাদু পদ তৈরি করা যাবে। এখানে কিছু জনপ্রিয় রেসিপি দেওয়া হলো: ১. আলু বোখারার শরবত একটি জনপ্রিয় ও স্বাস্থ্যকর পানীয়। এটি তৈরি করতে যা যা লাগবে: ৪-৫টি শুকনো আলু বোখারা ১ চা চামচ চিনি বা মধু ১ গ্লাস ঠান্ডা পানি সামান্য লেবুর রস পদ্ধতি: শুকনো আলু বোখারা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে এরপর ব্লেন্ড করে ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে নিন। চিনি বা মধু ও লেবুর রস দিয়ে পরিবেশন করুন। ২. আলু বোখারার চাটনি মিষ্টি ও টক স্বাদের জন্য এটি দারুণ উপকার করবে। উপকরণ: ১০টি শুকনো আলু বোখারা চিনি লবণ ভিনেগার সামান্য গোলমরিচ পদ্ধতি: সব উপকরণ একসঙ্গে সেদ্ধ করে ঘন হয়ে এলে ঠান্ডা করুন। চাটনি রুটি, পরোটা বা ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। ৩. আলু বোখারার কেক বা ডেজার্ট শুকনো আলু বোখারা ছোট টুকরো করে কেকের ব্যাটারে মিশিয়ে বেক করুন। এটি দারুণ একটি স্বাস্থ্যকর ডেজার্ট হবে। ৪. পোলাও বা বিরিয়ানিতে ব্যবহার আলু বোখারা পোলাও বা বিরিয়ানিতে মিষ্টি স্বাদ বৃদ্ধি করবে। এটি শুধু স্বাদই বাড়ায় না, বরং খাবারকে পুষ্টিকরও করে তোলবে। আলু বোখারা কেন আপনার খাদ্যতালিকায় থাকবে? আলু বোখারা একটি প্রাকৃতিক সুপারফুড, যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করবে এবং শরীরকে সুস্থ্য রাখবে। এটি সাশ্রয়ী, সহজলভ্য এবং অসাধারণ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। আপনি যদি স্বাস্থ্য সচেতন হন এবং একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাদ্য সন্ধান করেন, তবে আলু বোখারা আপনার জন্য সেরা পছন্দ হবে। উপসংহার আলু বোখারা একটি ছোট ফল হলেও এর স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং বহুমুখী ব্যবহার অনেক বেশি। এটি আপনার দেহকে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগাবে এবং সুস্থ্য রাখবে। এর সহজ রেসিপিগুলো আপনার খাদ্যতালিকায় নতুন স্বাদ যোগ করবে। তাই, আজই আপনার দৈনন্দিন খাবারে আলু বোখারার ব্যবহার করুন এবং এর অসাধারণ গুণাগুণ উপভোগ করুন।

আলু বোখারার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম: স্বাস্থ্য ও স্বাদের এক চমৎকার উৎস

আলু বোখারা, এই ছোট্ট মিষ্টি-টক ফলটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু করে তোলবে। পুষ্টিতে ভরপুর এই ফলটি শুধু একবার

Read More »
Shopping cart
Sign in

No account yet?

Start typing to see products you are looking for.
Index
Shop
0 Wishlist
0 items Cart
My account